গল্প: এক টাকার প্রেম,পর্ব ১: চায়ের দোকানে প্রথম দেখা।
রবিনের দিন শুরু হয় ভোর পাঁচটায়। চকবাজারের মোড়ে মামুন ভাইয়ের চায়ের দোকানে আগুন জ্বালিয়ে সে কেটলি বসায়। গরম পানি ফুটতে না ফুটতেই আশেপাশের রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, দোকানি—সবাই জড়ো হতে থাকে। রবিন সবার হাতে এক টাকার চায়ের কাপ তুলে দেয়, কিন্তু তার মন পড়ে থাকে দূরে কোথাও—যেখানে কিছুটা স্বপ্ন, কিছুটা অভাব, আর কিছুটা একাকীত্ব বাসা বেঁধেছে।
হঠাৎ একদিন, দুপুরের দিকে দোকানের সামনে একটা কালো গাড়ি থামে। দরজা খুলে এক তরুণী নামল—চোখে সানগ্লাস, হাতে দামি মোবাইল, গায়ে সুগন্ধি ভেসে আসছে। তিনি এগিয়ে এলেন চায়ের দোকানের দিকে।
রবিন প্রথমে ভাবল ভুল দেখছে। এত সুন্দর, অভিজাত একজন মেয়ে তার চায়ের দোকানে?
“এই চা কত?”—মেয়েটি জিজ্ঞেস করল।
“এক টাকা,”—রবিন জবাব দিল।
মেয়েটি হেসে বলল, “আমার জীবনে এত সস্তা কিছু কখনও খাইনি। একটা কাপ চা দাও তো!”
রবিন লাজুকভাবে চা এগিয়ে দিল। মেয়েটি চুমুক দিয়ে বলল, “চা খারাপ না। নাম কী তোমার?”
রবিন উত্তর দিল আমার নাম রবিন।
“ভালো নাম!”—মেয়েটি হেসে বলল, “আমি নায়লা। ইউনিভার্সিটি পড়ি, পাশের গলির ওদিকে।”
এই ছিল তাদের প্রথম দেখা। তারপর থেকে, প্রতি শুক্রবার আসত নায়লা। এক কাপ চা, কিছুক্ষণ গল্প, আর রবিনের মনের মধ্যে জন্ম নিত এক নতুন আবেগ।
তবে নায়লা জানত না, রবিন প্রতিবার তার আসার দিন গুনে রাখে। সে নিজের পুরনো জামা ধুয়ে পরে, চুল আঁচড়ে রাখে, এমনকি দোকানের আশেপাশে ঝাড়ু দিয়ে রাখে।
নায়লা জানত না, এক টাকার চায়ের কাপের চেয়ে রবিন অনেক বেশি কিছু ঢেলে দেয় তাতে—ভালোবাসা।
পরবর্তী পর্বে: নায়লার মনেও কি রবিনের জন্য কিছু জায়গা তৈরি হচ্ছে? সমাজের বাধা কি তাদের আলাদা করবে?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন